গণহত্যার বিচার হতে হবে : মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
- Repoter 11
- 04 Oct, 2024
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর: এখনই পুরোপুরি মূল্যায়ন করার সময় এসেছে বলে মনে করি না। কারণ, এক-দেড় মাস খুবই অল্প সময়। আর পরিবর্তনের পর যে সরকার এসেছে, সেই সরকারের অবস্থান, শক্তি ও সক্ষমতা তো আমাদের বুঝতে হবে। এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস খুব জনপ্রিয় মানুষ। এ দেশের মানুষ ও সারা পৃথিবী তাঁকে শ্রদ্ধা করে। কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে তাঁর সে রকম কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তবে তিনি তাঁর সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করছেন।
দ্বিতীয়ত, সরকারের অন্যদের মধ্যে তিন-চারজন বাদ দিয়ে বাকিদের সেভাবে সরকার পরিচালনার অভিজ্ঞতা নেই। এর মধ্যে তাঁরা কিছু ভালো ব্যবস্থা নিয়েছেন। তবে একটা জায়গায় আমার খটকা আছে, তাঁরা সংস্কারের জন্য যে ছয়টি কমিশন করলেন, এটা করার আগে তাঁদের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলা উচিত ছিল। একটা বিষয় হচ্ছে, রাজনীতিকে সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে যাওয়ার একটা প্রবণতা লক্ষণীয়। এখানে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলতে হবে। তাদের মতামত জানতে হবে এবং তার ভিত্তিতে সরকার এগোতে পারবে
মির্জা ফখরুল: মানুষ প্রাথমিকভাবে চেয়েছে আওয়ামী লীগের পতন। কারণ, আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরে রাজনীতি ও অর্থনীতি একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছে; প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সে জন্য মানুষ আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তন চেয়েছে। সরকার বলছে যে ইনসাফের রাজনীতি বা সাম্যের রাজনীতি চালু করব। আমরাও বলছি। আমরা সংস্কারের ৩১ দফা দিয়েছি। সরকারের কাজ দৃশ্যমান হতে হবে।
মির্জা ফখরুল: এটা সঠিক নয়। আমি এর সঙ্গে একমত না। আমরা রাজনীতিকেরা পুরো ক্ষেত্রটা তৈরি করেছি। জুলাইয়ে এই আন্দোলন শুরুর আগে পর্যন্ত আপনারা দেখেছেন আমরা কীভাবে আন্দোলন করেছি। এমনকি এই জুলাইয়ে সবার আগে জেলে গেছে আমাদের লোকজন। যেদিন এই আন্দোলন শুরু হয়েছে, তার পরের দিন ঢাকা শহর থেকে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নজরুল ইসলাম খানসহ আমাদের ৯ হাজার লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই আন্দোলনে আমাদের হিসাবমতে ৪২২ জন বিএনপির নেতা-কর্মী-সমর্থক নিহত হয়েছেন। আন্দোলনের ক্ষেত্রটা পুরোপুরিভাবে তৈরি করা। এখানে ছাত্ররা এসেছে কোটা আন্দোলন নিয়ে। সেই কোটা আন্দোলনটাকে মিস হ্যান্ডলিং (সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে পারেনি) করেছে আওয়ামী লীগ। সেটা না হলে এই আন্দোলন কোন পর্যায়ে যেত, তা বলা মুশকিল। তবে হ্যাঁ, ছাত্রদের একটা সুবিধা আছে। যেটা আমি বারবার বলেছি যে তরুণেরা, যুবকেরা, ছাত্ররা এগিয়ে না এলে কখনোই আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে যাবে না।
আমরা সব বিষয়ে, মানে তারা (সরকার) নির্বাচনের জন্য কত দিন সময় নেবে এবং সংস্কারে কত দিন। সংস্কার আমাদের কাছে অগ্রাধিকার নয়—এটা আমি পরিষ্কার করে বলছি। আমি মনে করি, নির্বাচনের জন্য যতটুকু দরকার, সেটা করুন। সংস্কার করার মূল দায়িত্ব কিন্তু হবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের। আপনাকে যদি প্রশ্ন করি যে হু আর ইউ, আপনি কে—এসব সংস্কার করছেন, সংবিধান সংস্কার করছেন। আপনি কে আসলে? আপনার স্ট্যাটাসটা কী? একটা আন্দোলন করে ছেলেরা আপনাকে বসিয়ে দিয়েছে আর আপনি সব দায়িত্ব পেয়ে গেছেন। আই ডোন্ট থিংক সো (আমি সেটা মনে করি না)। আপনাকে অবশ্যই এটা জনগণের মাঝ থেকে আনতে হবে। আর জনগণ থেকে আসার একমাত্র পথ হচ্ছে নির্বাচন।
আমাদের পক্ষে সময় বলা তো মুশকিল। তাঁরা বিষয়গুলো করবেন। সেখানে আমি একটা সময় বলে দিয়ে সাংঘর্ষিক অবস্থা সৃষ্টি করতে চাই না। আমরা তাঁদের যথেষ্ট সময় দিতে চাই। কারণ, তাঁদের তো আমরাই এনেছি। কিন্তু জনগণের পক্ষে কাজ করার সেই সুযোগটা তাঁদের নিতে হবে।
Leave a Reply
Your email address will not be published. Required fields are marked *